Created : Wed Nov 20 2024
বাংলাদেশে ডায়াবেটিস একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। দেশের প্রায় ৪৩.৫ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী তাদের রোগ শনাক্ত করতে পারেন না, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট মৃত্যুর ১০ শতাংশ ডায়াবেটিসজনিত কারণে ঘটে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই রোগ প্রতিরোধযোগ্য এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটি মোকাবিলা করা সম্ভব।
জাতীয় ডায়াবেটিস চিকিৎসার নির্দেশিকা অনুসারে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ২০ থেকে ৮০ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ১৪.২ শতাংশ এই রোগে ভুগছেন। ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে ২ কোটি ২৩ লাখে পৌঁছাবে।
ডায়াবেটিসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। দেশে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার ৬ থেকে ১৪ শতাংশ। এই রোগে আক্রান্ত মায়েদের ৫০ শতাংশের বেশি টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে, এই রোগে আক্রান্ত শিশুদেরও ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে এটি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বারডেম হাসপাতাল জানিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার রোগী ডায়াবেটিসজনিত সমস্যার জন্য চিকিৎসা নিতে আসে। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে এটি কিডনি, চোখ, হৃদপিণ্ড এবং পা-সহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এমনকি এটি হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি ফেইলিওর, অন্ধত্ব এবং অঙ্গচ্ছেদের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষজ্ঞরা কিছু কার্যকর উপায় অনুসরণ করার পরামর্শ দেন। এর মধ্যে রয়েছে: নিয়মিত ব্যায়াম করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ এবং ইনসুলিন গ্রহণ এবং সুশৃঙ্খল জীবনযাপন। জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, অতিরিক্ত ফাস্টফুড এবং চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস, শারীরিক অনুশীলনের অভাব এবং অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিসের প্রধান ঝুঁকি।
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি এবং অন্যান্য সংস্থা নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল, "ডায়াবেটিস: সুস্বাস্থ্যই হোক আমাদের অঙ্গীকার।" সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই নীরব ঘাতককে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সচেতন জীবনযাপন এবং প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের কোনো বিকল্প নেই।
ডায়াবেটিস, যা বর্তমান বিশ্বে স্বাস্থ্য সমস্যার একটি প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত, তা একাধিক শারীরিক জটিলতার দিকে পরিচালিত করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস (T2DM) এই রোগের সবচেয়ে সাধারণ ধরন এবং এটি জীবনযাত্রার গুণমানের উপর প্রভাব ফেলছে। আধুনিক চিকিৎসা ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় অগ্রণী হলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে অনেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এর ফলে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাকৃতিক, নিরাপদ, এবং কার্যকর বিকল্প চিকিৎসার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। ইউনানি চিকিৎসা এই ক্ষেত্রেই একটি প্রাচীন, কিন্তু কার্যকর সমাধান হিসেবে বিবেচিত।
ইউনানি চিকিৎসা একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি, যার ভিত্তি গ্রিক-আরব জ্ঞান। এটি রোগের মূল কারণ চিহ্নিত করে এবং সম্পূর্ণ শরীরের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করে। ইউনানি পদ্ধতি রোগীর শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
ডায়াবেটিসের ধরন
ডায়াবেটিসের কারণগুলো হলো:
ডায়াবেটিসের প্রভাব
ইউনানি সাহিত্যে ডায়াবেটিসকে "জিয়াবিতুস শাকরি" নামে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত তৃষ্ণা, প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি, এবং প্রস্রাবে মিষ্টির উপস্থিতি লক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ইউনানি পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ঔষধিগুলো প্রাকৃতিক, নিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর।
ইউনানি চিকিৎসায় একক ভেষজ এবং যৌগিক ফর্মুলেশন উভয়ই ব্যবহৃত হয়।
১. একক ভেষজ (Single Drugs)
ইউনানি চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ একক ভেষজ হলো:
২. যৌগিক ফর্মুলেশন (Compound Formulations)
ইউনানি চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু জনপ্রিয় যৌগিক ফর্মুলেশন হলো:
কুরসে তাবাশির (Qurse Tabasheer)
সাফুফ জিয়াবেটিস (Safoof Ziabetus)
দোলাবি (Dolabi)
ত্রিফলা ফর্মুলেশন
বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও কার্যকারিতা
কুরসে তাবাশির
গবেষণায় দেখা গেছে:
সাফুফ জিয়াবেটিস
দোলাবি
ত্রিফলা ফর্মুলেশন
গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকলাপে কার্যকর।
নিরাপদ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন
প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এর কোনো উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে কার্যকর
ডায়াবেটিসের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থাপনায় এই পদ্ধতি উপকারী।
সম্পূরক চিকিৎসা
এটি আধুনিক চিকিৎসার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
Rupayan FPAB Tower, 7th Floor (E-7), 2 Naya Paltan, Culvert Road, Dhaka-1000
+8801618883013
renixcare@gmail.com