0

ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার মধ্যে পার্থক্য

Created : Sun Nov 10 2024

ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি দুটোই প্রাচীনতম এবং ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ব্যবস্থা, যেগুলো প্রায় পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানব সভ্যতার রোগ নিরাময় ও স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। উভয় পদ্ধতিই প্রাকৃতিক উপাদান ও দেহ-মনের ভারসাম্য রক্ষার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, তবে তাদের মূলভিত্তি, উপাদান, এবং চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।


ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতি মূলত প্রাচীন গ্রিক ও পারসিক-আরবি চিকিৎসাবিদ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি গ্রীক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস এবং রোমান চিকিৎসক গ্যালেনের তত্ত্বের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে পারসিক ও আরবি চিকিৎসকগণ যেমন আল রাযী ও ইবনে সিনা এটি আরও বিকশিত করেন। ইউনানী পদ্ধতি দেহের বিভিন্ন ‘হিউমারস’ বা তরল পদার্থের ভারসাম্যের উপর নির্ভর করে, যা স্বাস্থ্যের মেরামত ও রক্ষা করে। এতে প্রধানত ঔষধি গাছ, মিশ্রণ ও প্রাণিজ উপাদান ব্যবহৃত হয়। চিকিৎসা পদ্ধতিটি রোগীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার উপর জোর দেয়।


আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি, অন্যদিকে, ভারতের প্রাচীন শাস্ত্র এবং প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে গড়ে ওঠা একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি দেহ, মন ও আত্মার সমন্বয়ে স্বাস্থ্য ও জীবনের মঙ্গল সাধনের ওপর জোর দেয়। আয়ুর্বেদিক তত্ত্ব অনুযায়ী, দেহের তিনটি ‘দোষ’ বা জৈবিক শক্তি (বাত, পিত্ত, এবং কফ) সমান মাত্রায় থাকলে দেহ সুস্থ থাকে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা প্রধানত ভেষজ উদ্ভিদ, যোগব্যায়াম, এবং খাদ্যাভ্যাসের সমন্বয় সাধনের উপর নির্ভর করে।


এই দুটি চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্যের মধ্যে রয়েছে:

  • মূল তত্ত্ব: ইউনানী চিকিৎসা দেহের হিউমারসের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করে, যেখানে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা দেহের তিন দোষের ভারসাম্যের উপর নির্ভর করে।
  • চিকিৎসা উপাদান: ইউনানী পদ্ধতিতে মূলত প্রাণিজ ও খনিজ পদার্থের ব্যবহার বেশি হলেও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উদ্ভিদের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়।
  • চিকিৎসা প্রক্রিয়া: ইউনানী পদ্ধতি প্রায়শই রোগের লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধ ব্যবহার করে, যেখানে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় সম্পূর্ণ জীবনযাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগ নিরাময়ে কাজ করা হয়।


Unani Treatment


ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার পরিচিতি

ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পৃথিবীর প্রাচীনতম এবং ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম। এগুলো বিশেষত দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপকভাবে গৃহীত এবং বিকশিত হয়েছে। উভয় পদ্ধতিই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে মানবদেহের সুস্থতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।


ইউনানী চিকিৎসা একটি ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতি যা প্রাচীন পারসিক এবং আরবি ঔষধি সৃজনপদ্ধতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। এটি গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস এবং রোমান চিকিৎসক গ্যালেনের চিকিৎসা দর্শনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত, যা পরে আল রাযী, ইবনে সিনা, আল জাহরাবী, এবং ইবনে আন নাফীসের মতো চিকিৎসকগণ দ্বারা সমৃদ্ধ এবং উন্নত হয়। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় এর ব্যাপক প্রসার ঘটে। ইউনানী চিকিৎসা সাধারণত শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য রক্ষা, রোগ প্রতিরোধ, এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সহায়ক বলে বিশ্বাস করা হয়।


আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ভারতীয় উপমহাদেশে উৎপত্তি লাভ করেছে এবং এটি বিশ্বজুড়ে ভেষজ চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। ‘আয়ু’ অর্থ জীবন এবং ‘বেদ’ অর্থ জ্ঞান; আয়ুর্বেদ অর্থাৎ জীবনজ্ঞান বা জীববিদ্যা। আয়ুর্বেদের মূল তত্ত্বে দেহ, মন ও আত্মার সংযোগের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিটি পাঁচ হাজার বছরের বেশি প্রাচীন এবং মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য ভেষজ, যোগব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারাকে সমর্থন করে। তবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে কখনো কখনো ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকায় এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।


চিকিৎসার মূলভিত্তি


ইউনানী চিকিৎসা: ইউনানী চিকিৎসার মূলভিত্তি হলো দেহের চারটি 'হিউমর' বা তরলের (রক্ত, পিত্ত, কালো পিত্ত, ও কফ) ভারসাম্য রক্ষা করা। এই ভারসাম্য বজায় রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষিত এবং রোগ প্রতিরোধ করা হয়। ইউনানী চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগ নির্ণয়ে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা এবং বিশেষ লক্ষণাবলী যেমন নাবয (পালস রেট), বওল (মূত্র), বারায (মল) ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, ইউনানী চিকিৎসায় ছয়টি পূর্বশর্তের (আসবাব-ই-সিত্তা যারুরীয়্যাহ্) ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়: বায়ু, খাদ্য ও পানি, দৈহিক সঞ্চালন ও স্থিতি, মানসিক সক্রিয়তা ও বিশ্রাম, নিদ্রা ও জাগরণ এবং নিঃসরণ ও অবরোধ।


আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা: আয়ুর্বেদে মূলভিত্তি হলো দেহের তিনটি 'দোষ' বা শক্তি (বাত, পিত্ত, কফ) ভারসাম্য রক্ষা করা। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিচার করে এবং রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস, হজম ক্ষমতা, কোষ, পেশী, ধাতু, এবং রোগের অবস্থানসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে মনোযোগ দেন। রোগ নির্ণয়ের জন্য সাধারণ শারীরিক পরীক্ষা, নাড়ীর স্পন্দন পরীক্ষা, মূত্র পরীক্ষা, মল পরীক্ষা, জিহ্বা ও চোখ পরীক্ষা, চামড়া ও কান পরীক্ষা, এবং শ্রবণেন্দ্রিয় ও স্পর্শেন্দ্রিয়ের কার্যকলাপ পরীক্ষা করা হয়।


ব্যবহৃত উপাদান ও ওষুধের ধরন


ইউনানী চিকিৎসা: ইউনানী চিকিৎসায় বিভিন্ন ভেষজ, খনিজ এবং প্রাণিজ উপাদান ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি উপাদান নির্দিষ্ট রোগের উপসর্গ দূর করতে সহায়ক এবং সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কিছু সাধারণ উপাদান হল: আদা, তেজপাতা, ইউক্যালিপটাস, মধু, এবং বিভিন্ন ধরনের খনিজ যেমন সোনা, রূপা, এবং তামা। এই উপাদানগুলো রোগীকে সুস্থ রাখতে এবং শরীরের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।


আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা: আয়ুর্বেদে প্রধানত ভেষজ উপাদান ব্যবহৃত হয়, যা প্রাকৃতিক উপাদানগুলো দিয়ে তৈরি। কিছু পরিচিত উপাদান হল: তুলসী, হলুদ, এলাচি, কর্পূর, আমলা, এবং পঞ্চতত্ত্ব (পানি, পৃথিবী, অগ্নি, বায়ু, এবং আকাশ)। এই উপাদানগুলো দেহের ভারসাম্য রক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত হয়। আয়ুর্বেদের ধারণায় প্রতিটি উপাদান এবং তাদের সংমিশ্রণ শরীরের তিনটি দোষ (বাত, পিত্ত, কফ) নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।


প্রতিটি পদ্ধতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য


ইউনানী চিকিৎসার বিশেষত্ব:
ইউনানী চিকিৎসার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি দীর্ঘস্থায়ী এবং জটিল রোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী। এই পদ্ধতি শরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। ইউনানী চিকিৎসা শরীরের চারটি "হিউমর" (রক্ত, পিত্ত, কালো পিত্ত, ও কফ) সঠিকভাবে ভারসাম্য রক্ষার মাধ্যমে রোগ নিরাময় করে এবং স্বাভাবিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি বিশেষভাবে হজমের সমস্যাসহ এমন সব দীর্ঘস্থায়ী রোগের চিকিৎসায় সফল, যেমন হাঁপানি, ডায়াবেটিস, এবং গ্যাস্ট্রিক


আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার বিশেষত্ব:
আয়ুর্বেদের বিশেষত্ব হলো এটি মানসিক ও শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখে এবং দেহের সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণে সহায়ক। আয়ুর্বেদ শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতার মধ্যে একটি সুষম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করে। এটি খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন রুটিন, বিশ্রাম, এবং প্রাণশক্তির উপর গুরুত্ব দেয় এবং শরীরের তিনটি "দোষা" (বাত, পিত্ত, কফ) ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে। এই পদ্ধতি শরীরের শক্তি পুনঃস্থাপন, স্বাস্থ্য পুনর্নিমাণ এবং রোগ প্রতিরোধে বিশেষভাবে কার্যকর।


Unani Treatment


ইউনানী চিকিৎসার উপকারিতা ও সীমাবদ্ধতা:


উপকারিতা:

দীর্ঘস্থায়ী রোগের চিকিৎসা: ইউনানী চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর, যেমন হাঁপানি, ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিক, ইত্যাদি।

প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ইউনানী পদ্ধতি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক, যা স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

প্রাকৃতিক উপাদান: ইউনানী ঔষধ প্রাকৃতিক ভেষজ, খনিজ এবং প্রাণিজ উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি, যা শরীরের উপর কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফেলে।


সীমাবদ্ধতা:

ধীরে কাজ করা: ইউনানী চিকিৎসা অনেক ক্ষেত্রে ধীরে কাজ করে, যার ফলে রোগীরা দ্রুত ফলাফল আশা করতে পারেন না।

পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন: ইউনানী চিকিৎসা কার্যকর হতে নির্দিষ্ট পুষ্টিকর খাবার এবং সঠিক জীবনযাত্রার প্রয়োজন, যা অনুসরণ করা কঠিন হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার: ইউনানী ঔষধের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে, যা কখনও কখনও সবার জন্য সুবিধাজনক নয়।


আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার উপকারিতা ও সীমাবদ্ধতা:


উপকারিতা:

রোগের মূল কারণ দূর করা: আয়ুর্বেদ রোগের মূল কারণ খুঁজে বের করে এবং সেগুলি দূর করতে সাহায্য করে, যা রোগের পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করে।

শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখা: এটি শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক, যা সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করে।

নির্ভরযোগ্য ভেষজ উপাদান: আয়ুর্বেদ প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান ব্যবহার করে, যা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম এবং সুস্থ জীবনযাত্রা গড়ে তুলতে সহায়ক।


সীমাবদ্ধতা:

সময়সাপেক্ষ: আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে কাজ করে, ফলে রোগীর ফলাফল পেতে অনেক সময় লেগে যায়।

নিয়মিত রুটিন ও ডায়েট: এই পদ্ধতির সফলতার জন্য রোগীকে নিয়মিত জীবনযাপন এবং ডায়েট মেনে চলতে হয়, যা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন: আয়ুর্বেদী চিকিৎসা সঠিকভাবে কার্যকর হতে জন্য অভিজ্ঞ এবং দক্ষ চিকিৎসকের প্রয়োজন, যা সব জায়গায় পাওয়া সহজ নয়।


আধুনিক সময়ে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ব্যবহার:

বর্তমান যুগে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে তুলনা করলে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ব্যবহার ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসার প্রতি মানুষের আগ্রহের কারণে। বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষ এই প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিগুলির দিকে ঝুঁকছে, কারণ এগুলি শরীরের উপর কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফেলে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।


ইউনানী চিকিৎসার আধুনিক ব্যবহার:
ইউনানী চিকিৎসা আধুনিক চিকিৎসার সাথে সমন্বয় করে ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক চিকিৎসক ইউনানী ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মিশ্রণ করে রোগীদের জন্য একটি সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করেন। যেমন, ডায়াবেটিস, হাঁপানি, গ্যাস্ট্রিক, স্ট্রেস এবং স্নায়ুজনিত সমস্যাগুলির চিকিৎসায় ইউনানী ঔষধ বিশেষভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আধুনিক গবেষণায় ইউনানী ঔষধের কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ায় এটি আরও জনপ্রিয় হয়েছে।


আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার আধুনিক ব্যবহার:
আয়ুর্বেদ আধুনিক সমাজে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে, বিশেষত শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য। আয়ুর্বেদিক উপাদান যেমন তুলসী, হলুদ, আমলা, এবং পঞ্চতত্ত্ব ভিত্তিক চিকিৎসা এখন বিভিন্ন স্বাস্থ্য রক্ষণাবেক্ষণ পণ্য ও সাপ্লিমেন্টসের মধ্যে পাওয়া যায়। ব্যস্ত জীবনযাত্রায় স্ট্রেস কমাতে, ডিটক্সিফিকেশন, হজম সমস্যা, ত্বক এবং চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিক পণ্য ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।


ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার গুরুত্ব উন্নত জীবনযাত্রায়:


অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য রক্ষণাবেক্ষণ:
ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শরীরের অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ইউনানী চিকিৎসায় হিউমারের ভারসাম্য বজায় রেখে শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করা হয়, যেখানে আয়ুর্বেদে তিনটি দোষের ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুস্থতা নিশ্চিত করা হয়।


মানসিক শান্তি:
বর্তমান যুগে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং স্ট্রেস বৃদ্ধি পাচ্ছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা এবং ইউনানী চিকিৎসা উভয়ই মানসিক শান্তি বজায় রাখতে সহায়ক। আয়ুর্বেদ যেমন যোগব্যায়াম, pranayama (শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ), এবং ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক শান্তি অর্জন করতে সহায়ক, তেমনি ইউনানী চিকিৎসাও ভেষজ ঔষধের মাধ্যমে স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।


ব্যক্তিগত এবং সামাজিক স্বাস্থ্য:
আধুনিক জীবনযাত্রায় স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বজায় রাখার জন্য প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি শুধুমাত্র রোগের চিকিৎসা নয়, বরং শরীর ও মনকে সঠিকভাবে রক্ষা করার উপায় হিসেবেও কাজ করে। এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হজম সমস্যা, ত্বক, চুল এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য পাওয়া যায়।


Visit Our Unani Medicine Shop: Unani Shop | Diabetes Medicine | Unani Skin Care | Unani Fitness | Weight Gainer Supplement | Unani Vitamins & Supplements

NEWSLETTER

GET LATEST NEWS

© 2024 all rights reserved by Renix unani laboratories limited

PaypalVisaAmerican ExpressMastercard