Rupayan FPAB Tower, 7th Floor (E-7), 2 Naya Paltan, Culvert Road, Dhaka-1000
+8801618883013
renixcare@gmail.com
Created : Sun Sep 22 2024
পাচনতন্ত্রের সমস্যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি সাধারণ সমস্যা। আধুনিক জীবনযাত্রার কারণে আমাদের খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ এবং শারীরিক অঙ্গবিকাশে নানা পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনগুলো আমাদের পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে, ইউনানি চিকিৎসা একটি প্রাচীন পদ্ধতি, যা প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে কার্যকরী হতে পারে। আমরা জানব ইউনানি চিকিৎসার মাধ্যমে পাচনতন্ত্রের সমস্যাগুলোর সমাধান কিভাবে সম্ভব।
পাচনতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে, যেমন:
১. অম্বল ও অ্যাসিডিটি
অম্বল সাধারণত খাবার পরবর্তী সময়ে পেটের মধ্যে অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদনের কারণে ঘটে। এতে পেটের অস্বস্তি, জ্বালাপোড়া এবং কষ্ট হতে পারে।
২. পেটের ব্যথা
পেটের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, মানসিক চাপ, বা পাচনতন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা।
৩. ডায়রিয়া
ডায়রিয়া সাধারণত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে বা সংক্রমণের ফলে হতে পারে। এতে পেটের মলত্যাগের হার বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের জলশূন্যতা ঘটতে পারে।
৪. কব্জ
কব্জ হচ্ছে পেটের স্বাভাবিক কার্যকারিতার অভাব। এটি খাদ্যে ফাইবারের অভাব, জলশূন্যতা বা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে ঘটতে পারে।
ইউনানি চিকিৎসা প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে কাজ করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইউনানি ঔষধের উল্লেখ করা হলো:
১. Hazmina Plus
কার্যকরী উপাদান: Piper nigrum, Trachyspermum ammi
উপকারিতা: এটি অম্বল, গ্যাস এবং অন্যান্য পাচনতন্ত্রের সমস্যাগুলো সমাধানে কার্যকর।
২. Gastarget 450ml Gastric Syrup
কার্যকরী উপাদান: বিভিন্ন হারবাল উপাদান
উপকারিতা: পেটের অস্বস্তি, গ্যাস এবং হজমের উন্নতি সাধন করে।
৩. Aloe Vera
উপকারিতা: এটি পাচনতন্ত্রকে শীতল করে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। এছাড়া এটি অম্বল কমাতেও সহায়ক।
৪. Ginger (আদা)
উপকারিতা: আদা পাচনতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এটি হজমে সহায়ক এবং পেটের অস্বস্তি কমায়।
ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতিতে অসুস্থতার প্রাথমিক কারণগুলির মধ্যে বায়ু, জল এবং খাদ্য সম্পর্কিত বাহ্যিক বিষয়গুলির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা একটি মূল কৌশল। এই পদ্ধতির লক্ষ্য হল শরীরের স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধার করা। যদি এই উপায়গুলো কার্যকর না হয়, তবে প্রাকৃতিক ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। একজন হাকিমের দ্বারা নির্ধারিত ইউনানি চিকিৎসা রোগীর তাবিয়াত উন্নয়নে সাহায্য করে এবং স্বাস্থ্য ও সুস্থতার অনুভূতি পুনরুদ্ধার করে।
হাকিমরা বিভিন্ন থেরাপিউটিক পদ্ধতি গ্রহণ করেন। যেমন, ইলাজ-বি-গিজা এবং বাডায়েটোথেরাপি, যেখানে নির্দিষ্ট ডায়েটের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, জ্বরের ক্ষেত্রে ইউনানি চিকিৎসা পুষ্টিকর খাদ্যের ওপর গুরুত্ব দেয়, যেখানে ডালিয়া (পোরিজ) এবং খির (দুধের ঝোল) অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। খাদ্যের পরিমাণ এবং গুণমানও বিবেচনায় রাখা হয়। আধুনিক ইউনানি থেরাপিতে বিরল ইলাজ-বি-মিসলা এবং বাঅর্গানোথেরাপি ব্যবহৃত হয়, যেখানে সুস্থ প্রাণীর টিস্যু দিয়ে অসুস্থ অঙ্গের চিকিৎসা করা হয়। হাকিমরা এই পদ্ধতিগুলোকে প্রাকৃতিক এবং কার্যকর মনে করেন। ইউনানি পদ্ধতির ফার্মাকোপিয়া ২,০০০ এরও বেশি ভেষজ, খনিজ ও প্রাণীজ ওষুধে সমৃদ্ধ।
ইউনানি ওষুধগুলি সাধারণত গ্রিকো-আরবি চিকিৎসায় বর্ণিত শাস্ত্রীয় পদ্ধতি অনুসারে প্রস্তুত করা হয়। এগুলি এককভাবে বা অন্যান্য পদার্থের সাথে মিলিয়ে ব্যবহৃত হয়, যাতে সাফল্য অর্জন করা যায়।
১৯২০-এর দশকে ভারতীয় চিকিত্সক আজমল খান ইউনানি ওষুধের গবেষণার সূচনা করেন, যেখানে প্রাচীন চিকিত্সকদের অলৌকিক নিরাময়ের দাবি করা বিভিন্ন প্রাকৃতিক পণ্যের ওপর গবেষণা চালানো হয়। ১৯৩০-এর দশকে সলিমুজ্জামান সিদ্দিকী রাউলফিয়া সার্পেন্টিনা উদ্ভিদ থেকে রিসারপাইন নামক বায়োঅ্যাকটিভ পদার্থের উৎস খুঁজে পান, যা পরবর্তীতে পশ্চিমা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। সিদ্দিকী এই উদ্ভিদের নামকরণ করেন আজমালাইন ও আজমালিসিন।
১৯৭৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউনানি পদ্ধতিকে ঐতিহ্যগত চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বর্তমানে ভারতে ইউনানি শিক্ষা ও গবেষণায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সক্রিয়। কেন্দ্রীয় ইউনানি মেডিসিন গবেষণা কাউন্সিল (CCRUM) এই পদ্ধতির গবেষণা এবং উন্নয়নকে উৎসাহিত করছে।
শাস্ত্রীয় ইউনানি চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র রোগের চিকিৎসায় "রেজিমেন্টাল" থেরাপি সুপারিশ করে। এতে ডালাক (ম্যাসেজ), হাম্মাম (স্নান), কারাত (ব্যায়াম), ফাসদ (রক্ত বের করার জন্য শিরা খুলে দেওয়া), হিজামত (কাপিং) এবং আমাত-ই-কাই (জোঁক ব্যবহার করে রক্তপাত) অন্তর্ভুক্ত। এসব পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো শরীরের অশুদ্ধ রক্ত বা অমেধ্য দূর করা।
পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা ও উন্নত করার জন্য জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু কার্যকরী পরামর্শ দেওয়া হলো:
১. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: প্রতিদিনের খাদ্যে ফল, সবজি, ডাল, ও সWhole grains অন্তর্ভুক্ত করুন। ফাইবার পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং কব্জের সমস্যা কমায়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার কমানো: প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনি এবং বেশি চর্বিযুক্ত খাবার কম খান। এগুলো পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
ছোট ছোট খাবার গ্রহণ: দিনের মধ্যে ৫-৬ বার ছোট পরিমাণ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এটি পাচনতন্ত্রের উপর চাপ কমায় এবং হজমে সহায়ক।
২. পর্যাপ্ত জলপান
প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন: জল শরীরের সমস্ত সিস্টেমকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে এবং পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
সোডা ও প্রক্রিয়াজাত পানীয় কমানো: কোমল পানীয় এবং অত্যধিক চিনি যুক্ত পানীয়গুলো পরিহার করুন। এগুলো পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম
প্রতিদিনের ব্যায়াম: নিয়মিত হাঁটা, যোগব্যায়াম, বা অন্য কোনো শারীরিক কার্যকলাপ করুন। এটি পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং স্ট্রেস কমায়।
পাঁচনশক্তি বাড়ানো: শারীরিক কার্যকলাপ পাচনতন্ত্রের অঙ্গগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৪. মানসিক স্বাস্থ্য
স্ট্রেস পরিচালনা: ধ্যান, প্রাণায়াম, এবং গভীর শ্বাসের মাধ্যমে স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
যথেষ্ট ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম নিন। ঘুমের অভাব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে, যা পাচনতন্ত্রের উপরেও প্রভাব ফেলে।
৫. খাদ্যগ্রহণের সময়সূচি
নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ: খাদ্য গ্রহণের সময়সূচি নির্দিষ্ট করুন। এটি পাচনতন্ত্রের জন্য একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করে।
সুস্থ খাবার নির্বাচন: খাদ্য নির্বাচন করার সময় সর্বদা স্বাস্থ্যকর বিকল্পগুলোর দিকে নজর দিন।
Visit Our Unani Medicine Shop: Unani Shop | Diabetes Medicine | Unani Skin Care | Unani Fitess | Weight Gainer Supplement | Unani Vitamins & Supplements